Saturday, 11 June 2016

দুই বছর পর থেকে দেশের কৃষকদের কাছ থেকেও কর আদায় করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।



দুই বছর পর থেকে দেশের কৃষকদের কাছ থেকেও কর আদায় করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
শনিবার রাজধানীর খামার বাড়িতে বাংলাদেশ কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতি আয়োজিত 'জাতীয় বাজেট ২০১৬-১৭ পরবর্তী পর্য়ালোচনা: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ' শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী মুহিত বলেন, এখন সময় হয়েছে আমাদের চাষী কিষাণরা, তাদেরও এখন ট্যাক্স দিতে হবে। কারণ এখন বেশ বড় কৃষক অনেক হয়ে গেছে।
তবে অর্থমন্ত্রী স্বীকার করেন, কৃষিখাতে কর আরোপ করার ক্ষেত্র খুব একটা বেশি হয় নাই, কিন্তু এলাকার প্রোডাক্টিভিটি এতো বেড়েছে যে তাদের ওপর করারোপ করা যায়।
এ বিষয়ে নিজের পরিকল্পনা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, পুরো উৎপাদনের ওপর নয় কৃষকদের আয়ের ওপর করারোপ করতে হবে।
সভায় অর্থমন্ত্রী জানান, দেশ থেকে ধীরে ধীরে আখ চাষ উঠিয়ে দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, আমি আখ চাষকে নিরুৎসাহিত করছি। আখ চাষে সময় লাগে প্রায় নয় মাস। আর চিনি কলগুলোর কারণে দেশের কয়েকশ' কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে। এছাড়া অনেক জমিও নষ্ট হচ্ছে।
পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য অধ্যাপক শামসুল আলমের সভাপতিত্বে সভায় অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বক্তব্য রাখেন।

Sunday, 5 June 2016

নাটোরে খ্রিস্টান ব্যবসায়ীকে হত্যার দায় স্বীকার আইএসের

নাটোরে খ্রিস্টান ব্যবসায়ীকে হত্যার দায় স্বীকার আইএসের

 

ঢাকা:  নাটোরে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী ব্যবসায়ী সুনীল গোমেজকে হত্যার দায় স্বীকার করেছে জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট বা আইএস।
আইএস সংশ্লিষ্ট সংবাদ সংস্থা আমাক এই খবর প্রচার করছে। 
হত্যাকাণ্ডের পাঁচ ঘণ্টার কম সময়ের মধ্যে হত্যার দায় স্বীকার করার দাবি জানালো আইএস।
একই বিবৃতিতে আইএস দাবী করেছে গত মাসে তারা বান্দরবানে একজন বৌদ্ধ ভিক্ষুকে হত্যার সাথেও জড়িত ছিল।
পুলিশ বলছে, নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার এক পল্লীতে মুদি দোকানী গোমেজকে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ভেতরে অবস্থানরত অবস্থাতেই কুপিয়ে হত্যা করে আততায়ীরা।
বেলা বারোটার দিকে এই ঘটনা ঘটে।
তিনি বড়াইগ্রামের বনপাড়া মিন পল্লীতে বসবাস করতেন।


বাংলাদেশে এর আগেও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী মানুষজনকে হত্যার দাবি করেছে আইএস।
এর আগে চলতি বছরের গোড়ার দিকে কুড়িগ্রামে একজন ধর্মান্তরিত খ্রিস্টানকে হত্যার দায়ও স্বীকার করে আন্তর্জাতিক এই জঙ্গি সংগঠনটি।
আর গত জানুয়ারিতেই ঝিনাইদহে আরো একজন ধর্মান্তরিত খ্রিস্টানকে হত্যা করা হয়। এই হত্যাকাণ্ডের দায়ও আইএস স্বীকার করেছে।
তবে বাংলাদেশের সরকার বরাবরই দেশটিতে আইএস-সহ যেকোনো বিদশি জঙ্গি সংগঠনের উপস্থিতির কথা নাকচ করে আসছে।
- See more at: http://amarbangladeshonline.net/index.php/details/focus/2163#sthash.ROA9ELP2.dpuf

৫০ সেকেন্ডের অপারেশন, সিসিটিভি ফুটেজ পুলিশের হাতে,

৫০ সেকেন্ডের অপারেশন, সিসিটিভি ফুটেজ পুলিশের হাতে


চট্টগ্রামের আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে হত্যা করতে দুর্বৃত্তরা সময় নিয়েছে মাত্র ৫০ সেকেন্ড। এই সময়ের মধ্যেই মিতুর মৃত্যু নিশ্চিত করে তিন হত্যাকারী নির্বিঘ্নে ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে সক্ষম হয়।
ওই হত্যাকাণ্ড এবং হত্যাকারীদের পালিয়ে যাওয়ার দৃশ্য ধরা পড়েছে জিইসি মোড়ের ওয়েল ফুড সেন্টার সংলগ্ন কয়েকটি সিসিটিভি ক্যামেরায়। এসব সিসিটিভি ফুটেজ এখন পুলিশের হাতে।
চট্টগ্রাম নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) পরিতোষ ঘোষ জানান, ঘটনাস্থলের আশপাশ থেকে কয়েকটি সিসিটিভির ফুটেজ ইতিমধ্যে সংগ্রহ করা হয়েছে। এসব ফুটেজে দেখা গেছে, নগরীর গোল পাহাড়ের দিক থেকে ছেলেকে স্কুলের গাড়িতে তুলে দিতে ব্যস্ততম জিইসি মোড় সংলগ্ন ওয়েল ফুড সেন্টারের সামনে আসছিলেন মিতু। হেঁটে আসার সময় তিনি ছেলের হাত ধরে ছিলেন। এই সময় জিইসি মোড়ের অপর প্রান্ত থেকে মোটরসাইকেলে করে তিন যুবক এসে ইচ্ছাকৃতভাবে মিতুকে মোটরসাইকেল দিয়ে ধাক্কা দেয়। এক যুবক তাকে এলোপাথারি ছুরিকাঘাত করে। আরেক যুবক গুলি করে। পরে তারা মোটরসাইকেলে চড়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। পুরো এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করতে দুর্বৃত্তরা সময় নিয়েছে মাত্র ৫০ সেকেন্ড।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, ঘাতকদের আনুমানিক বয়স ৩০ থেকে ৩৫ বছর। মোটরসাইকেলে আসা তিনজনের মধ্যে যে মোটরসাইকেল চালাচ্ছিল, তার মাথায় হেলমেট ছিল। মোটরসাইকেলে সবার পেছনে বসা একজনের হাতে পিস্তল এবং মাঝখানে বসা যুবকের হাতে ছিল ছুরি।
সিসিটিভি ফুটেজে তিন যুবককে দেখা গেলেও তাদের চেহারা স্পষ্ট নয় বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) চট্টগ্রাম প্রধান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বশির আহমেদ খান রাইজিংবিডিকে জানান, পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রীর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জঙ্গিদের দ্বারা সংঘটিত আগের হত্যাকাণ্ডগুলোর মিল আছে। এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। খুনিদের ধরতে ইতিমধ্যে অভিযান শুরু হয়েছে। খুনিদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করতে র্যা ব, পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ, সিআইডি ও পিবিআইয়ের ১০টি টিম ইতিমধ্যে মাঠে নেমেছে।
- See more at: http://amarbangladeshonline.net/index.php/details/focus/2162#sthash.VGcKUUBi.omj1WT3m.dpuf

সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ এক মিনিটেরও কম সময়ে খুন

ঘটনাস্থলে ঢেকে রাখা মাহমুদা ​খানমের লাশ। চারদিক নিরাপত্তা বেষ্টনী দিয়ে ঘেরা। ছবি: সৌরভ দাশঘটনাস্থলে ঢেকে রাখা মাহমুদা ​খানমের লাশ। চারদিক নিরাপত্তা বেষ্টনী দিয়ে ঘেরা। ছবি: সৌরভ দাশআজ রোববার সকাল সাতটা। চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানার ব্যস্ততম জিইসি মোড়সংলগ্ন ওয়েল ফুড নামে মিষ্টির দোকানের সামনের রাস্তা। সড়কের গোল পাহাড়ের দিক থেকে ছেলেকে স্কুল গাড়িতে তুলে দিতে জিইসি মোড় আসছিলেন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম। আর মোটরসাইকেল করে তিন যুবক জিইসি মোড় থেকে গিয়ে তাঁর সামনে হাজির। মোটরসাইকেলে থাকা তিন যুবকের মধ্যে এক যুবক তাঁকে প্রথমে ছুরিকাঘাত করে, আরেক যুবক গুলি করে চলে যায়। সময় নেয় ৪০ থেকে ৫০ সেকেন্ড।
ঘটনাস্থল থেকে সংগ্রহ করা সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ দেখে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) পরিতোষ ঘোষ প্রথম আলোকে এমনটাই জানান।

পরিতোষ ঘোষ আজ দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গের সামনে প্রথম আলোকে বলেন, হত্যার ধরন দেখে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। তারা আগে থেকেই ঘটনাস্থল রেকি করেছিলেন। ঘটনাস্থল থেকে ১০০ গজ দূরে বাসা থেকে বের হয়ে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে কখন আসবেন, তা নিশ্চয় দুর্বৃত্তরা আগে থেকে খোঁজখবর রাখছিল। পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী তাঁর ছেলে মাহমুদ আকতার মাহিরকে নিয়ে জিইসি মোড় পৌঁছার আগেই ওয়েল ফুড নামক দোকানের সামনে মোটরসাইকেলে করে তিন আরোহী আসে। যে গাড়ি চালাচ্ছিল, তার মাথায় হেলমেট ছিল। বয়স আনুমানিক ৩০ থেকে ৩৫। তার পেছনে দুজন বসা ছিল। মাঝখানে বসা যুবকের হাতে ছুরি ছিল। পেছনে বসা তৃতীয়জনের হাতে একটি পিস্তল ছিল।
ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে মাহমুদা খানমের লাশ। ছবি: সৌরভ দাশপরিতোষ ঘোষ আরও বলেন, মোটরসাইকেলে থাকা তিন যুবক প্রথমে মাহমুদা খানমকে মোটরসাইকেল দিয়ে ধাক্কা দেয়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই মাঝখানে থাকা যুবক প্রথমে তাঁর বুকে, হাতে ও পিঠে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। তৃতীয়জন তার হাতে থাকা পিস্তল দিয়ে খুব কাছ থেকে গুলি করে। প্রথম ফায়ারটি মিস হয়। দ্বিতীয় ফায়ারে বাবুল আক্তারের স্ত্রীর কপালের বাঁ পাশে গিয়ে লাগে। সবকিছু করতে ৪০ থেকে ৫০ সেকেন্ড লাগে।
পরিতোষ ঘোষ জানান, ভিডিও ফুটেজ থেকে পাওয়া তিন যুবকের চেহারা স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে না। প্রথমজনের মাথায় হেলমেট থাকায় চেহারা বোঝা যাচ্ছে না। তারপরও তাদের খোঁজা হচ্ছে।
আরও পড়ুন... 

মোটরসাইকেলে করে এসে এসপির স্ত্রীকে হত্যা.

মাহমুদা খানমের লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ছবিটি সকালে তোলা। ছবি: সৌরভ দাশমাহমুদা খানমের লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ছবিটি সকালে তোলা। ছবি: সৌরভ দাশচট্টগ্রামে পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানমকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। আজ রোববার সকাল সাতটার দিকে বাসা থেকে ১০০ গজ দূরত্বে নগরের পাঁচলাইশ থানার জিইসি মোড়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। ছেলেকে স্কুলের বাসে তুলে দিতে গিয়েছিলেন তিনি।
জঙ্গিবিরোধী অভিযানে এসপির সক্রিয় ভূমিকার কারণে তাঁর স্ত্রীকে হত্যা করা হতে পারে বলে ধারণা পুলিশের। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, এই দুর্বৃত্তরাও মোটরসাইকেলে করে এসেছিল।
নগরের ও আর নিজাম আবাসিক এলাকার ‘ইক্যুটি সেনটিয়াম’ নামের একটি বাড়ির সপ্তম তলায় পরিবার নিয়ে ভাড়া থাকতেন বাবুল আক্তার। বাসায় তাঁর স্ত্রী, ছেলে আকতার মাহমুদ মাহির, মেয়ে তাবাসসুম তাজনীন ও গৃহকর্মী ফাতেমা আক্তার ছিলেন।
আজ সকাল সাড়ে সাতটায় ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, জিইসি মোড় এলাকায় রাস্তায় পড়ে আছে বাবুল আক্তারের স্ত্রীর মরদেহ। পরনে কালো বোরকা। মাথায় হিজাব। লাশটিকে ঘিরে আছে লোকজন।

সকাল পৌনে আটটায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ক্রাইম সিন ইউনিটের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে চারপাশে ঘিরে রাখেন। ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হন নগর পুলিশ কমিশনার মো. ইকবাল বাহারসহ নগর ও জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহের পর সিআইডি চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিদর্শক মিতশ্রী বড়ুয়া প্রথম আলোকে বলেন, নিহত মাহমুদার মাথার বাঁ পাশে একটি ও শরীরে একটি গুলি লেগেছে। এ ছাড়া সেখান থেকে অব্যবহৃত তিনটি বুলেট উদ্ধার করা হয়। তিনি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এগুলো ৭.৬৫ বোর পিস্তলের গুলি হতে পারে। হত্যাকারীরা খুব কাছ থেকে গুলি করেছে। আলামত সংগ্রহ শেষে সকাল সাড়ে আটটায় লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়।
একই তথ্য জানালেন পিবিআই চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বশির আহম্মেদ। তিনি বলেন, ঘটনাস্থল থেকে একটি ব্যবহৃত এবং তিনটি অব্যবহৃত গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
ঘটনাস্থলে আসা চট্টগ্রাম নগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) পরিতোষ ঘোষ জানান, একাধিক প্রত্যক্ষদর্শীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাবুল আক্তারের স্ত্রী বাসা থেকে বের হয়ে হেঁটে তাঁর ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে জিইসি মোড়ে আসছিলেন। এ সময় একটি মোটরসাইকেলে করে এসে তিন যুবক প্রথমে বাবুল আক্তারের স্ত্রীকে ধাক্কা দেয়। এরপর তাদের একজন তাঁকে ছুরিকাঘাত করে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই গুলি করে গোলপাহাড়ের দিকে চলে যায়। চলে যাওয়ায় সময় তারা একটি ফাঁকা গুলি ছোড়ে। ঘটনাস্থলের আশপাশে সিসি ক্যামেরা রয়েছে। এগুলো থেকে ফুটেজ সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।
ঘটনাস্থলে আসা চট্টগ্রাম নগর পুলিশের কমিশনার মো. ইকবাল বাহার প্রথম আলোকে বলেন, ‘কে বা কারা কী জন্য এ খুনের ঘটনা ঘটিয়েছে, তা তদন্ত করা হচ্ছে। বাবুল আক্তার যেহেতু জঙ্গিদের গ্রেপ্তার ও অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় ছিলেন, সে জন্য জঙ্গিরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে কি না, তা উড়িয়ে দিচ্ছি না। সব কটি বিষয় সামনে রেখে তদন্ত করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।’
এ দিকে আজ সকাল নয়টায় ঘটনাস্থলের পাশে বাবুল আক্তারের বাসায় গিয়ে দেখা যায়, ছেলে আকতার মাহমুদ কাঁদছে আর বলছে, ‘আম্মু কোথায়? আম্মু কোথায়?’ আর নির্বাক হয়ে আছে তার ছোট বোন তাবাসসুম।

ঘটনাস্থলে পড়ে আছে মাহমুদা খানমের লাশ। হলুদ ফিতা দিয়ে চারদিক ঘিরে রেখেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ছবিটি সকালে তোলা। ছবি: সৌরভ দাশবাসার গৃহকর্মী ফাতেমা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, আজ সকালে আকতার মাহমুদকে স্কুলবাসে তুলে দিতে সকাল পৌনে সাতটায় বের হন মাহমুদা খানম। বাসার দারোয়ান আবদুস সাত্তার সাতটার দিকে বাসায় খবর দেন মাহমুদাকে কে বা কারা গুলি করেছে।
এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম। ছবিটি অ্যালবাম থেকে নেওয়া।দারোয়ান আবদুস সাত্তার জানান, বাসার সামনে জিই সিমোড়-গোলপাহাড় সড়কের জিইসি মোড়ে বাবুল আক্তারের স্ত্রীকে কে বা কারা গুলি করেছে—লোকজনের কাছ থেকে এই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান। এ সময় তিনি দেখতে পান, রাস্তায় বোরকা পরা অবস্থায় পড়ে আছেন বাবুল আক্তারের স্ত্রী। আর আকতার মাহমুদের পুরো শরীর রক্তে ভেজা। মাহমুদা খানমকে তিনি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করলে লোকজন জানান, তিনি মারা গেছেন। পরে তিনি আকতার মাহমুদকে বাসায় নিয়ে আসেন।
সম্প্রতি পুলিশ সুপার হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে বাবুল আক্তার গত বৃহস্পতিবার পুলিশ সদর দপ্তরে যোগদান করেন। তাঁকে নতুন কোনো জায়গায় পদায়ন করা হয়নি। এর আগে চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার) হিসেবে তিনি কর্মরত ছিলেন। স্ত্রী অসুস্থ, তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে—এমন খবর পেয়ে তিনি হেলিকপ্টারে করে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে পৌঁছান। এসেই তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে গিয়ে স্ত্রীকে খুঁজতে থাকেন। সবার কাছে জানতে চাইছিলেন, তাঁর স্ত্রীর কী হয়েছে। ২০০৭ সালে তাঁদের বিয়ে হয়।

বেলা ১১টায় হাসপাতালে আসেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এ ধরনের ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না; নিরপরাধ কাউকে খুন করা। এটি দিয়ে রাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ করো হয়েছে। জনগণ ও প্রশাসন মিলে জঙ্গিবাদ নির্মূল করতে হবে। তিনি আরও বলেন, ইতিমধ্যে বাবুল আক্তারকে অনেকবার হুমকি দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনার যেন এখানেই শেষ হয়। তিনি আশা করেন, অচিরেই হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করা হবে।
http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/878869/


ঘটনাস্থলে ঢেকে রাখা মাহমুদা ​খানমের লাশ। চারদিক নিরাপত্তা বেষ্টনী দিয়ে ঘেরা। ছবি: সৌরভ দাশঘটনাস্থলে ঢেকে রাখা মাহমুদা ​খানমের লাশ। চারদিক নিরাপত্তা বেষ্টনী দিয়ে ঘেরা। ছবি: সৌরভ দাশআজ রোববার সকাল সাতটা। চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানার ব্যস্ততম জিইসি মোড়সংলগ্ন ওয়েল ফুড নামে মিষ্টির দোকানের সামনের রাস্তা। সড়কের গোল পাহাড়ের দিক থেকে ছেলেকে স্কুল গাড়িতে তুলে দিতে জিইসি মোড় আসছিলেন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম। আর মোটরসাইকেল করে তিন যুবক জিইসি মোড় থেকে গিয়ে তাঁর সামনে হাজির। মোটরসাইকেলে থাকা তিন যুবকের মধ্যে এক যুবক তাঁকে প্রথমে ছুরিকাঘাত করে, আরেক যুবক গুলি করে চলে যায়। সময় নেয় ৪০ থেকে ৫০ সেকেন্ড।
ঘটনাস্থল থেকে সংগ্রহ করা সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ দেখে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) পরিতোষ ঘোষ প্রথম আলোকে এমনটাই জানান।

পরিতোষ ঘোষ আজ দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গের সামনে প্রথম আলোকে বলেন, হত্যার ধরন দেখে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। তারা আগে থেকেই ঘটনাস্থল রেকি করেছিলেন। ঘটনাস্থল থেকে ১০০ গজ দূরে বাসা থেকে বের হয়ে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে কখন আসবেন, তা নিশ্চয় দুর্বৃত্তরা আগে থেকে খোঁজখবর রাখছিল। পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী তাঁর ছেলে মাহমুদ আকতার মাহিরকে নিয়ে জিইসি মোড় পৌঁছার আগেই ওয়েল ফুড নামক দোকানের সামনে মোটরসাইকেলে করে তিন আরোহী আসে। যে গাড়ি চালাচ্ছিল, তার মাথায় হেলমেট ছিল। বয়স আনুমানিক ৩০ থেকে ৩৫। তার পেছনে দুজন বসা ছিল। মাঝখানে বসা যুবকের হাতে ছুরি ছিল। পেছনে বসা তৃতীয়জনের হাতে একটি পিস্তল ছিল।
ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে মাহমুদা খানমের লাশ। ছবি: সৌরভ দাশপরিতোষ ঘোষ আরও বলেন, মোটরসাইকেলে থাকা তিন যুবক প্রথমে মাহমুদা খানমকে মোটরসাইকেল দিয়ে ধাক্কা দেয়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই মাঝখানে থাকা যুবক প্রথমে তাঁর বুকে, হাতে ও পিঠে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। তৃতীয়জন তার হাতে থাকা পিস্তল দিয়ে খুব কাছ থেকে গুলি করে। প্রথম ফায়ারটি মিস হয়। দ্বিতীয় ফায়ারে বাবুল আক্তারের স্ত্রীর কপালের বাঁ পাশে গিয়ে লাগে। সবকিছু করতে ৪০ থেকে ৫০ সেকেন্ড লাগে।
পরিতোষ ঘোষ জানান, ভিডিও ফুটেজ থেকে পাওয়া তিন যুবকের চেহারা স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে না। প্রথমজনের মাথায় হেলমেট থাকায় চেহারা বোঝা যাচ্ছে না। তারপরও তাদের খোঁজা হচ্ছে।
 
Blogger Templates