আম্মাকে নিয়ে ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালে গেলাম। পায়ে ব্যথা।
ডাক্তার রোগ সম্পর্কে জানতে না চেয়ে আগেই আমাদের আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে জানা আরম্ভ করলেন।
আপনি কি করেন? আইটি ব্যবসা? বাহ... সেতো অনেক টাকা।
বিষয়টা আমি পজিটিভলিই নিলাম। কারণ আর্থিক সংগতির উপর ভিত্তি করে ঔষধ লিখবেন।
এক গাদা টেস্ট দিলেন। সাথে বলে দিলেন, সব টেস্ট পপুলার থেকেই করাতে হবে। বাইরের টেস্ট এলাউ না।
এবারও আমি পজেটিভলিই নিলাম। কারণ, দেশে মানহীন প্রচুর ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এর চেয়ে পপুলার ভালো।
টেস্ট করাতে গিয়ে দেখি কারো ১০% কারো ২০% ছাড়। আমি জিজ্ঞেস করলাম আমার কত পার্সেন্ট। কাউন্টার থেকে বললো, আপনার কোন ছাড় নেই। কার কত পার্সেন্ট ছাড় সেটা ডাক্তার প্রেসক্রিপশনে লিখে দেন।
পাশ থেকে একজন রোগী জানালেন, ডাক্তাররা ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে যে অবৈধ কমিশন পান ভালো ডাক্তাররা তার একটা পার্সেন্টেজ রোগীকে ছাড় হিসেবে দিয়ে দেন।
এবারো আমি পজেটিভলি নিলাম। এতো বড় একজন ডাক্তার। সারা দিনে রোগী দেখেন মাত্র ৮-১০ জন। কত টাকা আর ইনকাম। বৌ বাচ্চা আছে না।
গতকাল সন্ধ্যায় রিপোর্টসহ আম্মাকে নিয়ে আবার ডাক্তারের কাছে গেলাম। ডাক্তার রিপোর্ট যতই উল্টে দেখছেন তাঁর চেহারা ততই কালো হয়ে যাচ্ছে। আমার ভেতরে ততই মোচড় দিয়ে উঠছে।
কি হয়েছে ডাক্তার সাহেব। খুব খারাপ কিছু?
হুমম। হাড্ডি ক্ষয় হয়ে যাচ্ছে। হাড্ডির ভেতরে মগজ নাই। যে কোন সময় ধৈঞ্চার মতো টুস করে হাড্ডিগুড্ডি সব ভেঙ্গে যাবে।
এখন কি করতে হবে ডাক্তার সাহেব?
ইঞ্জেকশন দিতে হবে। এই ইঞ্জেকশন দিলে হাড্ডি জোয়ারের পানির মতো মগজে একদম ভরপুর হয়ে যাবে। একদম উসাইন বোল্টের মতো দৌড়াতে পারবে।
ইঞ্জেকশন দিতে হবে। এই ইঞ্জেকশন দিলে হাড্ডি জোয়ারের পানির মতো মগজে একদম ভরপুর হয়ে যাবে। একদম উসাইন বোল্টের মতো দৌড়াতে পারবে।
দাম কত এটার?
৩৫ হাজার টাকা। প্রতি বছরে একটা করে দিতে হবে।
৩৫ হাজার টাকা। প্রতি বছরে একটা করে দিতে হবে।
ঠিক আছে, আমরা যত দ্রুত সম্ভব এটা দেয়ার চেষ্টা করব।
না আজকেই দিতে হবে। এক্ষুনি। আমার এখানে বেড আছে। স্যালাইনের মতো শুয়ে দিতে হবে। আজকে না দিলে খারাপ হয়ে যাবে।
না মানে, টাকা পয়সার ব্যাপারতো। বাসায় গিয়ে প্রিপারেশন নিয়ে শীঘ্রই দিয়ে ফেলব।
ক্যান, এটিএম কার্ড নেই সাথে? তুলে নিয়ে আসেন। ডাক্তারের কথা না শুনলে কপালে কিন্তু দুর্গতি আছে।
স্যরি, আজকে না স্যার। আপনি প্রেসক্রিপশনে লিখে দিন। আমরা পরে এসে দিয়ে যাবো।
ডাক্তার এবার চেহারা খারাপ করে প্রেসক্রিপশন লিখে হাতে দিয়ে বললেন, যান।
আমি প্রেসক্রিপশন দেখিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, স্যার এখানে ইঞ্জেকশন কোনটা?
ওটা লিখিনি। ওটা এখানে ছাড়া পাওয়া যায় না। কোম্পানীকে ফোন দিলে এখানে এসে দিয়ে যাবে।
তাও লিখে দেন।
বলেছি না লেখা যাবে না।
কিভাবে বলি, ডাক্তার আমি আপনাকে পে করেছি পরামর্শের জন্য। প্রেসক্রিপশন লিখার জন্য। ইঞ্জেকশন দেয়ার জন্য নয়। কোন কিছু হাইড করার জন্য নয়। হাইড করা ডাক্তারের মতো মহৎ পেশায় মানায় না।
আমি কি বিষয়টা এখনো পজেটিভলিই নেব?--SMN Rahman


